রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১৬ বছরের কিশোর আজ বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কারাগারের সামনে প্রধান সড়কে তাকে মুক্ত করা হয়।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় এই কিশোর ১৩ দিন কারাগারে ছিল। রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রথম আদালতের বিচারক মোস্তফা কামাল আজ দুপুর পৌনে একটার দিকে তাকে জামিন দেন। কিশোরের আইনজীবী আবদুল মোকছেদ বাহালুল প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে কারাগারের প্রধান ফটক থেকে বের হয়ে বাবার হাত ধরে প্রধান সড়কে আসে ওই কিশোর। সেখানে তাকে স্বাগত জানাতে মা, বোনসহ স্বজনেরা অপেক্ষা করছিল। প্রধান সড়কের পাশে এসে স্বজনেরা তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন, যা এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা করে। এ সময় সড়কের পাশে উৎসুক জনতাও ভিড় করে।
কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় কিশোরকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। সে জানায়, ‘মনে হলো কিছু একটা শরীরে বিঁধল। এরপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরে দেখি, আমার হাতে হ্যান্ডকাফ। সেই জায়গা কোথায় ছিল, তা বলতে পারি না।’
কিশোরের বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে এখন বাসায় যাই, খাওয়া-দাওয়া ও গোসল করুক, বিশ্রাম নিক। এরপর সব বুঝেশুনে প্রয়োজন হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব।’ এরপর একটি অটোরিকশায় কিশোরকে নিয়ে স্বজনেরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
দুপুরে আদালতে কিশোরের জামিনের পর আইনজীবী আবদুল মোকছেদ বলেন, ‘৪ আগস্ট এই কিশোরের জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ সকালে তার আগাম জামিন শুনানির জন্য আদালতে আবেদন দেওয়া হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কিশোরের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি।’
এই কিশোর রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির (বিজ্ঞান বিভাগ) ছাত্র। জন্মসনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৬ বছর ১০ মাস। তবে মামলায় তার বয়স ১৯ বছর দেখিয়েছে পুলিশ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরকে ১৯ জুলাই আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটনের তাজহাট আমলি আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তখন আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
0 Comments