Header Ads Widget

নিহত চারজনের পরিবার পেল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমারখালী ইউএনও কার্যালয়ে স্বজনদের আহাজারিছবি: প্রথম আলো কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘর্ষ-সহিংসতায় কুষ্টিয়ার চারজন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নিহত হয়েছেন। তাঁদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমারখালী ও খোকসাতে গিয়ে নিহতদের স্বজনদের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন তিনি।

জেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক আশ্বাস দেন, নিহতদের পরিবারের স্বজনেরা সরকারি যেকোনো সুযোগ-সুবিধায় অগ্রাধিকার পাবেন এবং তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বিষয়ে প্রশাসন নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে।

বিকেল চারটার দিকে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে উপস্থিত হন তিন পরিবারের সদস্যরা। উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের নিহত আলমগীর শেখের (৩৬) মা আলেয়া খাতুন, স্ত্রী রিমা খাতুন, মেয়ে তুলি জাহান (১১), এবং ছেলে আবদুল আওলাদ (৭) এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আলমগীর ঢাকার রামপুরা বনশ্রী এলাকায় একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির গাড়িচালক ছিলেন। ১৯ জুলাই দুপুরে আহতদের পানি পান করাতে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।


এ সময় আলেয়া খাতুন বলেন, ‘ছেলে চলি গিছে, এখন নাতি-পুতি কীভাবে মানুষ করব? এ জন্য সরকার আরও সহায়তা দিত, তাইলে ভালো হতো।’

নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়ে মারা যান জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর ভবানীপুর গ্রামের আবদুস সালাম (২৪) ও সেলিম মণ্ডল (২৮)। সালামের ভাই মোহাম্মদ আলামিন ও সেলিমের বাবা ওহাব মণ্ডলের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।


মোহাম্মদ আলামিন বলেন, ‘দুই মাস আগে বাবা মারা গেছেন। এরপর ভাই গেল। ভাইয়ের স্ত্রী এখনো অসুস্থ। তাঁর দেড় বছরের মেয়ে আছে। পরিবার নিয়ে চলা খবু মুশকিল হয়ে পড়েছে। ডিসি স্যার টাকা দিয়েছে। একটা চাকরি হলে ভালো হতো।’
ওহাব মণ্ডল বলেন, ছেলে হারিয়ে তাঁরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাঁদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া
হোক।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাত, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হাসান তারেক, জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকী বিশ্বাস প্রমুখ।

বিকেল পাঁচটার দিকে খোকসা থানাপাড়া এলাকায় নিহত মারুফ হোসেনের বাড়িতে যান জেলা প্রশাসক। বৃষ্টি হওয়ায় মূল সড়ক থেকে নেমে হেঁটে গলিপথে মারুফের টিনের চালার ঘরে পৌঁছান জেলা প্রশাসক। বাড়িতে গিয়ে মারুফের বাবা মা ও ছোট্ট বোনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

মারুফের বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, ছেলের মৃত্যুর পাঁচ ঘণ্টা আগেও ফোনে কথা হয়েছিল। মারুফ কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছে। ১ জুলাই সে ঢাকাতে যায়। সেখানে শিক্ষানবিশি করছিল। রামপুরা এলাকার একটি মেসে থাকত। গুলিতে মারুফ নিহত হয়। 



Post a Comment

0 Comments